eng
competition

Text Practice Mode

বাংলা আমাদের মাতৃভাষা

created Feb 16th, 04:26 by Asraful Islam


0


Rating

807 words
0 completed
00:00
স্বর্বস্তওে বাংলা চালু শুধু আবেগের বিষয় নয়, দেশের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রগতির সঙ্গেও এটি সম্পৃক্ত। গণতান্ত্রিক রীতিপদ্ধতি সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে অফিস আদালত জনতার ভাষার মধ্যে সাযুজ্য থাকা জরুরি। বিচার প্রার্থী সাধারণ মানুষ আদালতের ভাষা বুঝতে না পেওে অতিরিক্ত খরচ হয়রানির স্বীকার হয়, যা ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। ঠিক একই রকমভাবে, বিদেশি ভাষার বর্ণিত জ্ঞান কিংবা রচিত গ্রন্থ যতই মূল্যবান তথ্য সস্মলিত হোক না কেন তা নিতান্তই অর্থহীন, যদি তা মাতৃভাষা অনূদিত হয়ে শিক্ষার্থীও মস্তিকে না পৌছায়। অর্থৎ উপলব্ধির জন্য শেষ পর্যন্ত মাতৃভাষার। সাহায্য নিতেই হয়। শুদ্ধ স্বদেশি সাংস্বতিক চর্চা উন্নয়ন ,একটি আত্মনির্ভরশীল ভাষাগোষ্ঠী হিসাবে বিশ্বেও বুকে সর্বোপরি পরবতী প্রজন্মোর। জন্য স্বল্প ব্যবহৃত জগাখিচুড়ি বাংলা ভাষা নয়, একটি সমৃদ্ধ উন্নত ভাষা রেখে যেতে সর্বস্তওে বাংলা ভাষার চালুর আন্দোলোনকে বাস্তবায়ন করতে হবে এখনই।  
সর্বস্তওে বাংলা ভাষা প্রচলনসংক্রান্ত আইন :
১৯৭১ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে বাংলা একাডেমির অনুষ্ঠানে উদ্বেধনী ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, আমি ঘোষনা করছি আমাদেও হাতে যেদিন ক্ষমতা আসবে সেদিন থেকেই দেশের সর্বস্তওে বাংলা ভাষা চালু হবে। ১৯৭২ সালের নাভেম্বার স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্টীয় ভাষার বাংলা সাংবিধান স্বীকৃতি দিলেও বাংলা ভাষা প্রচালন আইন-১৯৮৭, প্রণয়ন করা হয়। ওই আইনের ৩(১) বলা হয়েছে সরকারি, স্বয়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশে সাথে যোগাযোগ ব্যতীত অন্যান্য আইননুন কর্যাবলী অবশ্যই বাংলা লিখিত হইবে। এই ধারা মোতাবেক কোন কর্মস্তলে যদি কোন ব্যক্তি বাংলা ভাষা ব্যতীত অন্য কোন ভাষার আবেদন বা আপীল করেন তাহা হইলে উহা বেআইনি অকর্যকর বলিয়া গণ্য করা হইবে। এই আইনটিও ব্যর্থ হলে ১৯৯৮ সালের  শেষদিকে বাংলা ভাষা বাস্তবায়নে কোষ গঠন করা হয়। এর কর্মপরিধির মধ্যে অন্যতম ছিল বৃটিশ আমল থেকে বিভিন্ন মন্ত্রলয়ণ, বিভাগ, স্বয়ওশাসিত প্রতিষ্ঠান আদালতের প্রযোজ্য ইংরেজি প্রণীত আইন। বাংলা ভাষার রূপান্তর। কার্যক্রমটি কিছুদিন জোরেশাওে চললেও এক সময় তা গতি হরিয়ে ফেলে। আজ এর অস্তিত্ব প্রায় নেই বললেই চলে।
সর্বস্তরে বাংলা ভাষা ব্যবহারে সমস্যা:
ব্যক্তি পর্যয়ে থেকে শুরু করে  জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে ভাষা ব্যবহারযোগ্য। ধ্বনিতাত্তি¡ক দৈন্য কিংবা প্রয়োগিক কোনো সমস্যাও ভাষার নেই। কতিপয় সমস্য লক্ষ করা যাই, যা সমাধানেযোগ্য যেমনÑ
০১.    বাংলা পরিভাষাগত জটিলতা
০২.    মানবসম্পদ অনুবাদ শব্দ তৈরি ব্যবহার অদক্ষতা
০৩.    সরকরি কাজে -কর্মে সাধুভাষার ব্যবহার।
০৪.    আইন-আদালত সংক্রন্ত, বৈজ্ঞানিক, চিকিৎসাবিষয়ক শব্দাবলীর অনুবাদে জটিলতা।
০৫.    উচ্চ শিক্ষায় মানবসম্পদ বইয়ের অভাব।
০৬.    স¤্রাজ্যবাদী বিদেশে ভাষার আগ্রসী থাবা।
০৭.    অবাধ আকাশ সংস্কতি।
০৮.    বাংলা ব্যবহারে হীনমান্যতা।
 
সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা:
সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচোলনের ক্ষেত্রে উদ্ভত সমস্যার সমাধানের প্রচেষ্টা অব্যাহিত রয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বেশকিছু পরিভাষা পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। আইনআদালতে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাংলা প্রচলনের কার্যকরী উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে। বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সম্পাদনায় বাংলা আইন শব্দকোষ রচিত হয়েছে। বর্তমান কথোপকথন, সংবাদপত্র পাঠ-পুস্তকসহ প্রায় সর্বক্ষেত্রেই চলিত ভাষা ব্যবহৃত হচ্ছে। শুধুমাত্র অফিসআদালতে সাধু ভাষার ব্যবহার এখনও রয়ে গেছে। এসব ক্ষেত্রেও চলিত ভাষার প্রচলন হলেও বাংলা বাংলা ভাষার ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পাবে। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার ভাষার সার্বিক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বেশ কিছু সংগঠন প্রতিষ্ঠত হয়েছে। শুদ্ধ উচ্চরণ বাচিত উৎকর্ষের পাশাপাশি এসব সংগঠন বাংলা ভাষাকে সর্বস্তরে পৌঁছে দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
কতিপায় অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত:
আইন আদালত সংক্রন্ত পরিভাষার জটিলতা সর্বস্তরে মাতৃভাষার ব্যবহারে ক্ষেত্রে প্রধানতম অন্তরায় বলে মনে করা হয়। বিজ্ঞান চিকিৎসাবিষয়ক পরি ভাষার অভাবকে এক্ষেত্রে দায়ী করা হয়। অথচ চীন-জাপান তাদের চিত্রশিল্পির দুর্ভেদ্য ভাষা দিয়েই উচ্চশিক্ষয় জায়গা করে নিয়েছে চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এমনকি প্রতিবেশী নেপালেও তাদের নিজস্ব ভাষার আদালত খোদ বাংলাদেশেও কতিপয় ভাষাপ্রেমিক বিদ্বাস বিচারপতি আদালতে পুরোপুরি বাংলা ভাষা ব্যবহারে অনুপম দৃষ্টন্ত স্থাপন করেছেন। মহান ভাষা দিবসকে স্মণীয় করে রাখতে বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে সর্বাধিক বাংলা ভাষায় রায় প্রদান করেন বিচারপতি এবাদুল হক। এরপর  বিচারপতি আব্দুস সালাম বিচারপতি খায়রুল হক বাংলা ভাষার রায় প্রদান করে উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষার মর্যদাকে সুগউচ্চে তুলে ধরেণ। উচ্চ আদালতে সর্বাধিক বাংলা ভাষার রাং দিয়ে অমর হয়ে আছেন চট্টগ্রমের কৃতি সন্তান শ্রদ্ধেয়। বিচারপতি আব্দুল সালাম মামুন। এছাড়া বিচারপতি মোহাম্মদ হাশিদুল হক, বিচারপতি আব্দুল আওয়াল, বিচারপতি মোহাম্মুদ আবু তারিক, বিচারপতি এস, এম জিয়াউল করিম প্রমুখের নাম স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
 
বুদ্ধিজিবিদের মতামত সুপারিশ:  
                      
সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচালনে সমস্য তা থেকে উত্তরণের জন্য ভাষাসৈনিকসহ দেশর বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীগণ দিকনির্দেশনামূলক সুপারিশ মতামত প্রদান করেছেন।  নিন্মে কতিপায় সুপারিশ মতামত তুলে ধরা হলো বাংলাদেশে সর্বস্তরে বাংলঅ প্রচলন না হবার পেছনে রাজনৈতিক উদাসীনতা এবং সরকারি উদ্যোগহীনতাকেই দায়ী মনে করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। স্কুল- মাদরাসায় ইংরেজি মাধ্যম  শিক্ষাব্যবস্তার এই বিভাজনও তাঁর মতে সমভাবে দায়ী। থেকে উত্তরের জন্য তিনি বলেন-‘সরকারি পর্যয়ে উদ্যেগ নিতে হবে। মাতৃভাষার শিক্ষার প্রচলন করতে হবে। একই দেশে তিন ধরণের শিক্ষা চালু করতে হবে। পাশাপাশি বাংলা ভাষার  প্রচুর সাহিত্য লেখা গবেশনা করতে হবে যাতে ভাষা আরো সমৃদ্ধ হয়। সব ক্ষেত্রে বাংলা প্রচালন না হওয়ার পেছনে শ্রেনিস্বর্থ দায়ী ভাষা সৈনিক সুফিয়া আহমেদ মনের করেন, বাংলা একডেমি বা ধরণের প্রতিষ্টানগুলো ঠিক যতটা কাজ করা উচিত ততটা করছে না
 
উপসংহার:
ভাষা শহিদের রক্তের মর্যদা রক্ষা বিশ্বজুড়ে আন্তর্জতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যদা সমুন্নত রাখতে সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন অপরিহার্য। এজন্য খুব বেশি কিছু করতে হবে না শুধু প্রয়োজন ভাষার প্রতি একটু ভালোবাসা আন্তরিকতা কবি মাইবেল মধূসূদন দত্তের মতে শুধু ফিরে আসতে হবেÑ
‘পালিলাম আঞ্জা সুখে; পাইলাম কালে।
মাতৃভাষা রূপ খনি, পূর্ণ মণিজালে।”
 

saving score / loading statistics ...