eng
competition

Text Practice Mode

শিক্ষার্থীদের আত্নহত্যার কারণ

created Aug 23rd 2023, 15:22 by Mozammal haque


1


Rating

392 words
10 completed
00:00
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ আবাসিক হল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থী আত্নহত্যা করেছেন কি না, সেটা তদন্তের বিষয়। কিন্তু আত্নহত্যাজনিত মৃত্যু প্রায় নিয়মিতভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোয় ঘটছে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর পেছনে যেসব কারণ থাকে, সেগুলো পুরোপুরি জানা সম্ভব নয়। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ,২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত ৫৩২ জন শিক্ষার্থী আত্নহত্যা করেছেন। এর মধ্যে স্কুল-কলেজ পর্যায়ের ৪৪৬ জন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এই হিসাবে প্রতি মাসে গড়ে ৪৫ জন শিক্ষার্থী আত্নহত্যা করেছেন। নিঃসন্দেহে এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ মানসিক চাপ। এই মানসিক চাপ আবার তৈরি হয় বিভিন্ন সামাজিক কারণে।  
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-উপদেষ্টা হয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ আর্থিক চাপে থাকেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁরা এমন সব পরিবার থেকে আসেন, যেসব পরিবারের পক্ষে পড়াশোনার ন্যূনতম খরচ চালানো সম্ভব হয় না। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর প্রতি মাসে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে গড়ে এক হাজার টাকার মতো খরচ হয়। খাওয়াসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে তাঁদের আরও প্রায় পাঁচ হাজার টাকা লাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই অনেক দরিদ্র পরিবার সন্তানকে আবাসিক হোস্টেলে রেখে ভর্তি কোচিং করান। ফলে তখনই অন্তত অর্ধলাখ টাকার দেনায় পড়েন। পরবর্তী সময়  বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করাতে গিয়ে এই দেনা আরও বাড়তে থাকে। শিক্ষার্থীরা ক্ষেত্রে দুই ধরনের চাপে পড়েন। একদিকে বাড়ি থেকে টাকা নিতে পারে না, অন্যদিকে বাড়িতে টাকা পাঠানোর তাগিদ অনুভব করতে থাকে।  
শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপের আরেকটি কারণ হলো ভবিষ্যৎ জীবনের অনিশ্চয়তা। যে আশা নিয়ে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, বছরখানেকের মধ্যে তাঁদের সেই আশা মরতে শুরু করে। চাকরির বাজারের অবস্থা কোনো কোনো শিক্ষার্থীকে প্রবল হতাশায় নিমজ্জিত করে। প্রেম, বিয়ে,শারীরিক সম্পর্ক ধরনের কারণেও শিক্ষার্থীরে মধ্যে মানসিক চাপ তৈরি হয়। ঘনিষ্ঠ ছবি,ভিডিও ইত্যাদি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির কারণ কিংবা ছড়িয়ে দেওয়ার পর অনেকে আত্নহত্যা করেন। নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর নিজের প্রতি ঘৃণাবোধ থেকেও অনেকে আত্নহত্যা করেন। কোনো কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী ভালো ফল করার চাপ নিতে না পেরে হতাশায় পড়েন। অনেকে পরীক্ষায় কম নম্বর পেয়ে কিংবা অন্য কোনোভাবে শিক্ষকদের দ্বারা লাঞ্চিত হয়ে আত্নহত্যা করেন। মাদকে আসক্ত হয়েও কিছু শিক্ষার্থী মানসিক শক্তি হারান এবং কোনো একপর্যায়ে আত্নহত্যার কথা ভাবতে শুরু করেন।
অনেক শিক্ষার্থী  জানাও থাকে না, বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা আছে। কোনো কোনো শিক্ষার্থী জেনেও কাউন্সিলিং নিতে সংকোচ বোধ করেন। যেসব শিক্ষক ধরনের কাউন্সিলিং দিয়ে থাকেন, তাঁরা লক্ষ করেছেন, মানসিক চাপে থাকা শিক্ষার্থীরা তাঁদের পরিবার নিকটজনের কাছে নিজেদের সমস্যার কথা গোপন রাখেন। প্রথম দিকে এসব শিক্ষার্থী তাঁদের কোনো সহপাঠী বা প্রিয়জনের কাছে সমস্যার কিছু কিছু হয়তো প্রকাশ করেন, কিন্তু পরে কাউকেই আর কিছু জানান না।
 

saving score / loading statistics ...