Text Practice Mode
মানুষের মৈলিক চাহিদা
created Jul 13th 2019, 08:31 by Sujan Devnath
1
523 words
17 completed
5
Rating visible after 3 or more votes
00:00
মানুষের মৈলিক চাহিদা পাঁচটি, যথাঃ-খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা। আপাত দৃষ্টিতে মৈলিক চাহিদার তালিকাটি পরিপূর্ণ। মানুষের মনঃস্তাত্ত্বিক দিক বিশ্লেষন করলে কিন্তু এই তালিকাকে ত্রুটিযুক্ত মনে হতে পারে। একটি মানুষ খাদ্যের পর যে অভাব বোধ করে তার নাম যৌনতা। তাই তালিকাটা হওয়া উচিৎ ছিল অনেকটা এই রকম- খাদ্য, কাম, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা। অনেকে এই মতবাদের সাথে একমত নাও হতে পারেন, কিন্তু এই ক্ষেত্রে আমি একটু গোঁড়ামী দেখাবো। আমাদের সমাজে যৌনতাকে সবসময় নেতিবাচক দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হয়। এই বিষয়টাকে অনেকটা অশ্লীল বলে প্রচার করা হয়। শাখ দিয়ে মাছ ঢাকার মত যৌনতাকেও ঢেকে রাখা হয়। এর একমাত্র কারন যৌনতা সম্পর্কে আমাদের অঙ্গতা, ধর্মীয় সংস্কার, রাজনৈতিক ফয়দা লুটেরাদের চাতুরি। যৌনতা সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা নেওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে অশ্লীলতা কাকে বলে। পর্নোগ্রাফি বা অশ্লীলতা বলতে আমি সাধারণত রাস্তার ধারের যৌনরসালো ভরপুর চটিগুলোকেই বুঝে থাকি। আর বাংলা সিনেমার কাটপিছ জোড়া লাগানো বাণিজ্যিক ছবিগুলোর কথাই জানি। যদি কোনও একজন জনপ্রিয় লেখকের লেখাকে যৌনতার পক্ষপাতে দুষ্টে বলে অভিহিত করে নিষিদ্ধ করা হয়। তবে তো যৌনবিজ্ঞান এবং নারী পুরুষের রতিক্রীয়া থেকে প্রজননের পর্বটাও পর্যন্ত রীতিমত ভয়াবহ ভাবে অশ্লীলতার দায়ে যুক্ত এবং দণ্ডিত। প্রকাশ্যে আমরা যৌনতার বিষয় গোপন করবো, সবার সামনে ধর্মের তজবিহ গুনবো, আড়ালে যৌনতা নিয়ে রসালো মুখরোচক আলাপ করবো, রাতের অন্ধকারে ঘরে বসে রাত ভর দুরদর্শনে পর্নোগ্রাফি দেখবো অথবা বেশ্যালয়ে রাতে নগ্ন নৃত্যের সুরা পান করবো। অনেকটা এইরকম-“ অন্তরেতে নগ্ননারী, সাধ্য কি ভাই কইতে পারি, তাইতো শোকে নামায পরি, আযান দিলে ইফতার করি ”। এটাই হয়তো বাঙ্গালীর ধর্ম উপাসনার চরিত্র। এতে না হয় ধর্ম, না হয় ভণ্ডামি। যা হয় তার নাম বিকৃত যৌনাচার, বিকারগ্রস্ত মনোবৃত্তি। এখানে যৌনতা থাকবে সিন্দুকের মধ্যে, আর ধর্ম হবে বহিরাবরনের চাদর। অবাধ যৌনতা অথবা অতিমাত্রায় রক্ষণশীল ধর্ম অনুশীলন কোনটাই বাঙ্গালী জাতি স্বত্তার সাথে খাপ খায় না। ধর্মে, যৌনতায় অথবা রাজনীতিতে; যে জায়গাতেই যাওয়া হোক না কেন সব জায়গাতেই বাঙ্গালীদের দেখা যাবে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতে। যেটা বিষধর সাপের চেয়ে ভয়ানক, লক্ষ্য বস্তু নির্ণয়ে যদি ভুল না থাকে, তবে বিষধর সাপের একটা ছোবলেই মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট, তার জন্য আর দ্বিতীয় ছোবলের প্রয়োজন পড়ে না। ধর্ম, যৌনতা, রাজনীতি থেকে শুরু করে বাঙ্গালী জাতি স্বত্তায় যে বিষ প্রয়োগের ধারা শুরু হয়েছে, তার জন্য হয়তো বাঙ্গালী উত্তর পুরুষ, বাঙ্গালী পূর্ব পুরুষকে কখনও ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি নিয়ে দেখবেনা। সর্বদাই নাক ছিটকাবে। এর কারনেই কি ধর্মে; কি যৌনতায়; কি রাজনীতিতে বাঙ্গালীকে বিকারগ্রস্ততার পরিচয়বাহক হিসেবে দেখা যাচ্ছে। যদিও ধর্ম হচ্ছে শান্তির প্রতীক কিন্তু ইদানিং জংগীবাদ নামক আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে ধর্মের নাম ভেঙ্গে। রাজনীতি হয়ে উঠছে মানুষ ঠকানোর যন্ত্র। যৈনতা হচ্ছে সিন্দুকের ভিতর লুকানো সম্ভোগ। পুরুষেরা যখন যৌনতা নিয়ে আলাপ করি তখন নিজেদের মা-বোন-মেয়ের বেলায় খুব সর্তক ও শ্রদ্ধাশীল এবং ভালবাসা স্নেহের পরশ পাথরে স্বতি-সাবিত্রী হয়ে গদগদিয়ে উঠি। সে শুধু নিজের রক্ত সম্পর্কীয় মা বোন মেয়ে বলেই, কিন্তু পাড়ার অনাত্মীয় কোন নারী দেখলেই দোকানের মোড়ের সুবোধ ছেলটিও যে কোন রকম বাজে মন্তব্য করতে ছাড়ে না। শরীর দিয়ে না হলেও, অন্তত চোখ দিয়ে একবার মনের কল্পনায় সঙ্গম জলে নিজেক স্নান করিয়ে ছাড়ে। কিন্তু দর্শন কি বলে? দর্শন বলে- যৌনতা এটা একটা প্রকৃতিপ্রদত্ত মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। মানুষের বোধ বুদ্ধি আছে বলেই যৌনতা বিভিন্ন শ্রেণী বিভাজনে বিভক্ত। ধর্মীয় দৃষ্টি ভঙ্গি এবং সামাজিক ব্যবস্হাপনায় রক্ত সম্পর্কীয় কারো সাথে যৌন সম্পর্ক স্হাপন নিষিদ্ধ। ব্যতিক্রম কিছু যে ঘটে না তা নয়। কিন্তু মানুষ যদি পশু স্তরের প্রাণী হতো? মানুষ পশু স্তরে প্রাণী নয় বলেই যৌনতা নিয়ে এতো শ্রেণী বিন্যাস-বিভাজন।
saving score / loading statistics ...